যদি পরিসংখ্যান টানা হয়, তবে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সফলতম কোচের তালিকায় শীর্ষেই থাকবেন গোলাম রব্বানী ছোটন। বয়সভিত্তিক দলের কোচ হিসেবে শিরোপা জিতেছেন অনেক। যতটুক অপ্রাপ্তি ছিল, সেটাও আজ দূর হলো রঙ্গশালায়। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো সাফের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার পর।
সাফের বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে এর আগে মেয়েদের নিয়ে তিনটি শিরোপা জিতেছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। অনূর্ধ্ব-১৫, ১৮, ১৯ দলের হয়ে শিরোপা তিনটি জিতেছিলেন ছোটন। এ ছাড়াও অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে তিনি জিতিয়েছেন বঙ্গমাতা নারী আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ।
তবে ছোটনের সফলতার ষোলকলা পূর্ণ হলো সিনিয়র দলকে সাফ জেতানোর পর। যেই দলটা সাফ জিতেছে, সেটাও কিন্তু এই ছোটনের হাতেই গড়া। বয়সভিত্তিক দলে কোচিংয়ের সুবাদে সানজিদা-কৃষ্ণারা তার হাত ধরেই বেড়ে উঠেছে। তাদের বাবার মতো আগলে রেখেই এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন ছোটন। তারই পুরস্কার যেন আজকের সাফ শিরোপা জয়।
অথচ মেয়েদের কোচ হওয়ায় কম উপহাস সহ্য করতে হয়নি ছোটনকে। বন্ধুমহল পর্যন্ত মহিলা কোচ বলে ঠাট্টা করত তার সঙ্গে। সাফ জয় যেন সেসব উপহাসের জবাব হয়ে এলো আজ। যদিও ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নির্লিপ্ত সাবিনা-তহুরাদের গুরু। তিনি জানিয়েছেন, কাজটাকেই ভালোবাসতেন তিনি। তাই নারী দলের জন্যই নিজের সবটুক দিয়েছেন।
গোলাম রব্বানী ছোটন সাফল্যর কৃতিত্ব খেলোয়াড়দের দিয়ে বলেন, ‘যখন আমি মহিলা দলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন আমার বন্ধু-বান্ধবরাও আমাকে বলত যে ‘মহিলা কোচ’। যখন রাস্তায় হেঁটে যেতাম, আমাকে বলা হত ‘মহিলা কোচ’। এভাবে উপহাস করত। আমি কাছে ওরকম লাগত না। আমি কাজকেই পছন্দ করতাম। ’
একটা জিনিস প্রায় সবার নজরেই এসেছে। সেটা, কেউ যেন সাফল্যর একক অংশীদার হতে চান না। ফুটবলাররা বরাবরই তাদের সাফল্যের পেছনে ছোটনের অবদান দেখেন। ছোটন আবার প্রতিটি সাফল্যতেই প্রশংসায় ভাসান ফুটবলারদের। কাঠমান্ডুতে আজও ছোটন ফুটবলারদের কৃতিত্ব দিয়েছেন, ‘আমি মেয়েদের আবারও স্যালুট জানাব। তারা আসলে অবিশ্বাস্য ফুটবল খেলেছে। দেশের প্রতি, বাবা-মায়ের প্রতি তাদের যে কৃতজ্ঞতাবোধ, সেটা তারা দেখিয়েছে। আজকে মেয়েরা এ পর্যন্ত এসেছে, তারা তৈরি হয়েছে।